Friday, April 19, 2013

স্বার্থপর তুমি

যেদিন তুমি অন্যের হাত ধরে আমায় চিনতে পারনি-

সেদিন আমি অনেক কিছু বলতে চেয়েও পারিনি। কিভাবে বলতে হতো তাই বুঝিনি। তাছাড়া বলার এতটুকু ইচ্ছেও হয়নি তখন আমার। কিভাবে বলতাম আমি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছি ভেতরে। সে রাতে তুমি মুঠোফোনে আমাকে বলেছিলে "ভালো থেক যেখানেই থাকো।" আমিও হাসি মুখে তোমার কথা মেনে নিয়েছিলাম। আমি ভালো আছি। ভালোই থাকব আজীবন।

আচ্ছা তুমি কি এখনো আকাশের তারাগুলো দেখো তোমার টেলিস্কোপে? যখন তারাদের দেখো, সবকিছু কি আগের মত দেখতে পাও? কতগুলো তারা তুমি দেখো বলতো? তোমার মনে আছে আমাকে তুমি শিখাতে কোন তারাটা কোনখানে আছে, তাদের নাম অবস্থান সব। আমার মন খারাপ হলে বলতে, "ইতি চল তারা দেখবি।" তুমি আমাকে বলতে ২০ টি তারার কথা কোনোটি খুব উজ্জল কোনোটি একটু কম উজ্জল কোনটি লাল কোনটি নীল, কোনটি সাদা। জানো, এখনো মনে আছে আমার, তোমার প্রিয় তারা হচ্ছে স্বাতী(আর্কটুরাস)। আর আমার ছিল, অভিজিত(ভেগা)। কিছু ভুলা হয়নি আমার আজও। না ভুলে ভুলে আমি কখনো ক্লান্ত হইনি। বলতো কতগুলো তারাময় রাতের ছবি আঁকার পর ক্লান্ত হবে ভান গোঘ আর সাথে আমিও ? আদৌ কি ক্লান্ত হব আমরা?

তুমি যেমন আমাকে অসহায় বানিয়েছিলে একসময়। আমার খুব ইচ্ছে ছিল তোমাকেও অসহায়ত্ব দেখানোর। আমি তা পারিনি। জীবনের কোনো কোনো মুহুর্তে তুমি আমাকে জিতিয়েছ আবার প্রচন্ড রাগে তুমি আমায় হারিয়ে দিয়েছ। তুমি চাইলেই আজীবন আমাকে জিতিয়ে দিতে পারতে। এখন আর এসব বলে কি লাভ বলো? আমার কথাগুলো আজ তোমার কাছে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইটের টুকরো। অথবা দেয়ালে গাথানো একটার পর আরেকটা ইটের আস্তর, তারপর আরেকটা। আমি কোনদিন একটার টুকরোও ভেঙ্গে ফেলতে পারিনি। শুনো আমার কথাগুলো তোমার বাজে গল্প মনে হয়। আমার এই কথার রাজপ্রাসাদে তুমি আসতে চাইলে তুমি এসো। দেখে বলে যেও কেমন দেখোছো তুমি? কোনো কথার মিল খুঁজে পেয়েছিলে কি একটার সাথে আরেকটার?

মনে পড়ে আমাদের দুজনার মেঘনার পারে বসে কাটানো অলস সন্ধ্যা বেলাটুকুর কথা? বিকেলের রোদ দেখতে পারিনি বলে আমার সেকি অভিমান। তুমি পাগলের মত নিজেকে গালি দিচ্ছিলে। আমি মুখ ফুলিয়ে ঘাসফুল দেখছিলাম। হঠাত তুমি পেছন থেকে আমার চোখ বন্ধ করে নদীর পাশে নিয়ে যে দৃশ্য দেখালে তাতে আমার না দেখা বিকেলও লজ্জা পেয়েছিলো সেদিন। আমি অবাক মুগ্ধ হয়ে সূর্যের ম্লানমুখে বিদায় নেয়া দেখি। আমার সেই দেখাও তোমাকে পোড়ায়। তুমি আমাকে দুরে নিয়ে বললে "আমার বিদায় দেখতে ভালো লাগেনা আমাকে দেখ। আমার অর্ধ উন্মিলীত চোখে তাকিয়ে দেখ। আমার এ পোড়া চোখ তোকে ছাড়াতো আর কিছুই দেখেনা। সূর্যের দিকে তাকিয়ে কি দেখিস তুই? তোর তাকানো দু'চোখের পাতায় আর মনিগুলোর মাঝেও তুই এই আমাকে রাখবি। শুধু আমাকে দেখবি।"

আমি চুপ করে হেঁটে চলতাম তোমার পাশে মাথা নীচু করে ঘাসের দলে। আমার ছায়ার প্রতিটি দৈর্ঘ্য মেপে মেপে আমি তোমার পাশে পাশে হাটতাম; তুমি তখন একটু আমায় ছুঁয়ে দিয়ে পুড়িয়ে দিতে আর আমি ঐ পোড়া ঘাসের মতো পুড়তাম ভীষণ সুখে। ঠিক যেমন সূর্য সারাদিন সমস্ত ঘাসদের ছুঁয়ে পুড়িয়ে দিতো।আমি পুড়তাম আর পথ চলতে চলতে একটু থেমে তোমার হাতে হাত বুলাতাম। নিজের ছায়ার পাশে আমারও ছিল একটি আলোর চিড়।

তোমাকে অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে হয়। তোমার বারান্দার হঠাত উড়ে আসা চড়ুইটার কথা। তোমার ঝুল বারান্দার রেলিঙে জড়ানো নিল অপরাজিতার কথা। আচ্ছা তোমার গীটারটাতে কি এখনো আমায় ভেবে মন খারাপ করে টুং টাং করে বাজাও? আমার তো কত কি মনে পরে তোমায় ভেবে। এই এদিকে দেখো। আমার দিকে তাকিয়ে দেখো আমি না বলতে পারার ব্যর্থতায় কিভাবে কষ্টে মরি। বুকের মাঝে দলা পাকিয়ে আসা কথাগুলো কিভাবে শ্বাসরুদ্ব করে দেয় আমার। আমি বলব না তোমায়। কখনো জানতেও দেবনা নিজের বেদনায় কিভাবে আমি ঢেকে রাখি নিজের চোখ, কি করে পুড়ে যাই প্রতিদিন ব্যর্থতার আগুনে। আমার এই নিরবতা আজীবন অচেনা করে রাখবে আমায় তোমার কাছে। আমি পিছু ফিরে চাইনি আমি চাইবনা কোনদিন এ আমার অহং।

-অপরিচিত মানবী
০৪/১৯/১৩

Thursday, April 18, 2013

চাঁদ কুয়াশার অপমান


বিক্ষিপ্ত এই আমি
আবার বিদ্রোহ করছে আমার এ মন
একটা শোকগ্রস্ত পোকা
মাথার চারপাশে ধীরে ধীরে
বাঁধছে এক চিন্তার সুক্ষ জাল
কিছু সময় অজুহাত নিয়ে
ঠিক তখনি সে কাটতে চায়।।

স্মৃতির বাতাসে উড়ছে খই
শূন্যতার পাতায় পরে আছে
কিছু ধুলোর আস্তর
যেন আমি এক অযত্নে ফেলে রাখা
বুকশেলফের পুরনো এক অপঠিত বই।।

প্যাঁচানো কানা গলিটায়
শেওলা রাত নেমে আসে
তারিখেরা হারায় একটুপ,দুইটুপ করে
আর আমি শিকেয় ঝুলিয়ে রাখি
কিছু ক্রমিক পাপ।।

আমি এখন নির্জন অধিবাসী
বহু মধ্যরাতের সমাপ্তির পর
মোমবাতি জ্বালানো শোক নিয়ে
বালকের দৃষ্টি কোনে ঠাই নেব
সে জেগে থেকে দেখবে আমায়
আধখানা ঘুমে ক্রমে অরন্যে
চাঁদ কুয়াশায় অপমানে।।
-অপরিচিত মানবী
০৪/১৮/১৩

আমার ছুটে আসা

যখন আমি কষ্টে থাকি
আর তুমি থাকো ভীষণ অভিমানে
সব কষ্টের হাহাকার ভুলেও
তুমি আমায় কাছে ডেকো
আমি ছুটে আসব তোমার কাছে।।

মধ্যরাতের অন্ধকারে
কিংবা রাতের নিসঙ্গতায়
কখনো মনে পরে যায় আমায়
তুমি আমায় কাছে ডেকো
আমি ছুটে আসব তোমার কাছে।।

কোনো এক জোত্স্না রাতে
নীরব নিথর ব্যথিত মেঘেদের সাথে
শূন্যতা যদি এসে ভর করে
তুমি দু'হাত বাড়িয়ে ডেকো আমায়
আমি ছুটে আসব তোমার কাছে।।

স্নানের পরে অথবা
কখনো পূজোর ঘরে
ভালবাসার ফুল খোপায় গুঁজে দিতে
তুমি দরজা খুলে ডেকে নিও বুকে
আমি ছুটে আসব তোমার কাছে।।

-অপরিচিত মানবী
০৪/১৭/১৩

Tuesday, April 16, 2013

কাঁচপোকা

কাঁচ পোকায় বিরাট চন্দ্রবিন্দু। আমি অন্ধকারে তাকে দেখে বলি সর্বনাশ। তবে কি কাঁচে আলো নেই বলেই পোকার শরীরে কালো বেদনায় আভাস?
-অপরিচিত মানবী
০৪/১৭/১৩

Monday, April 15, 2013

স্মৃতিময় বাতায়ন

বরষায় ঝরেছে কবেকার মেঘলা স্মৃতিময় বাতায়ন আমার
কোন অজানার বিশাল আকাশ হতে থেকে থেকে উঁকি দেয় অতীত আধার||
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/১৫/১৩

তারপর একসময়

তারপর একসময় আবার সব হারিয়ে যায়
রৌদ্র গলে গলে পড়ে একটার পর একটা
জানালার শিকগুলোর ফাঁক থেকে
দোতলার বারান্দা দিয়ে ছাদের চিলেকোঠা দিয়ে
খুশি ভরা ফুটপাতের সংসারের থেকেও
রৌদ্র নেমে আসে
আবার তখনি ডুব দেয় সূর্যের মাঝখানে
অনেক মাইল দূরে||
(একটি অসমাপ্ত কবিতা| হয়ত লিখে শেষ করব হয়তবা না)
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/১৪/১৩

মা আবার কবে আসবে

সবাই বসে আছে| আমি তাকিয়ে আছি মা'র দিকে| মা আমায় কাছে টেনে চুমু খেয়ে বলেন আমি আসি| আমি স্তব্দ হয়ে মা'র চলে যাওয়া দেখি| আমার মা| যার সাথে জন্ম-জন্মান্তরের সম্পর্ক| আমার জীবনটাকে অচল করে পৃথিবীর এপাশ থেকে অন্যপাশে পিছু না ফিরে হেঁটে চলে গেলো| আমাকে জিগ্যেস করার সুযোগও দিলেন না- মা আবার কবে আসবে তুমি? আমি অপেক্ষায় থাকব আজীবন|
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/১৪/১৩

সময়ের খেলা

সময়টা দ্রুত গতিতে না গেলে অনেক অবশিষ্ট কাজের সমাপন হতো। সময়ের খেলা এতো দ্রুত ঘটে যাচ্ছে যে জীবনটা সার্কাসের রেসের মতো মনে হয়।আর আমি হচ্ছি সে সার্কাসের। সার্কাসের রেসের মতো জীবন প্রতিযোগিতায় সময়ের মত দ্রুত গতিতে দৌড়াতে চাইনা। যা আমার গন্তব্যই আমাকে ভুলিয়ে দিতে পারে একদিন।
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/১৩/১৩

Saturday, April 13, 2013

অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠি

ছোটবেলায় আমি আর আমার ছোড়'দা বিকেল হলেই রেইস খেলতাম| বিশাল সেই খোলা মাঠে আমরা দুজন ছুটতাম| দাদা বলত দেখব কে আগে ছুটে দেয়াল ছুঁতে পারে| দাদার সাথে আমি পারিনি কখনো| আমি পিছে পড়ে থাকতাম আর দাদা কত সামনে| দাদা আমাকে হারাতে পেরে খুব হাসতো| আমি মন খারাপ হলেও দাদাকে না বলে বলতাম আমিও একদিন ছুঁতে পারবো দেয়ালটা| ছুটে হয়রান হয়ে গেলে দুজন বসে পড়তাম| বসে বসে দু'ভাই-বোন গল্প করতাম| গল্পের বিষয় হতো মা যদি কোথাও টাকা লুকিয়ে রাখে সেটা আমাকে খুঁজে বের করে দাদা কে বলতে হবে| আমি খুব রেগে গিয়ে বলতাম আমি পারবো না ভাগ| দাদা আরো রেগে গিয়ে বলত আর কোনদিন বলিস প্রজাপতি ধরে দিতে| এটা শুনেই চুপসে যেতাম| দাদার হাত ধরে মুখ কালো করে বলতাম রাগ করিস না দাদা| আচ্ছা যা বলব তোকে|

প্রজাপতি ছিল আমার কাছে স্বপ্নের কিছু| প্রজাপতি দেখবার লোভে দাদার কত অদ্ভুত আবদার পূরণ করেছি| প্রজাপতি ধরবার জন্য তার পেছনেও ছুটেছি কতো। আমি ভাবতাম একদিন আমি প্রজাপতির চেয়ে আরো দূরে উড়ে যেতে পারবো । উড়ে যাওয়াতো দূরের কথা, কখনো ছুয়েও দেখতে পারিনি এই আমি| দাদার হাত থেকে দেখতাম| আর রাতে স্বপ্নে সেই প্রজাপতির সাথে উড়ে বেড়াতাম|

স্বপ্নের মত উড়ে বেড়ানো হয়নি কখনো| জীবনের দৌড়ে আস্তে আস্তে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি । কিন্তু আমি দৌড়াতে পারিনা বাকি সবার মতো । আজকাল আমার সব গতি কেমন যেন থেমে আসছে । মনে হচ্ছে সবাই আমাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে । আর আমি শুধু এক জায়গায় স্থির দাঁড়িয়ে দেখছি আর দেখছি । আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে, আমি ভীষণ অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠি ।
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/১৩/১৩

থেকে যাওনা মা

সন্ধ্যা থেকে কিছুতেই মন বসছিলো না। কাজেও বার বার ভুল হচ্ছিলো। কোন কিছুলে জাই তেই মন বসে না আমার। বার বার মনে হচ্ছিলো বাড়ী চলে যাই, কিছুটা সময় কাটাই আমার মায়ের সাথে।

'মা' দু'অক্ষরের একটি সাজানো শব্দ। গর্ভধারণ করেন বলেই তিনি গর্ভধারিণী আবার জন্ম দেন বলেই তিনি জননী। মা'র সব ভূমিকার এক একটি খন্ডচিত্র মাত্র। আমি মাকে কখনোই সম্পূর্ণ রূপে সংজ্ঞায়িত করতে পারিনা।

আর কয়েক ঘন্টা পর আমার চলে যাবে মা। বড়'দা মা'র লাগেজ ঘুছাচ্ছে। আমি আড় চখে দেখছি মা'কে। মা'র চোখে-মুখে খুশী ঝড়ে পড়ছে। আমাদের দিকে যেন উনার কোন খবরই নেই। হঠাৎ মা আমার কাছে উঠে এসে বললেন আয় ঘুমাবি। আমার বুকটা কেদে উঠলো। ভাবলাম,"মা কি হতো আরো দুটো দিন বেশী থেকে গেলে? থেকে যাওনা মা। তুমি যা বলবে আমি শুনবো।
 

-অপরচিত মানবী
০৪/১৩/১৩

এক বিক্ষিপ্ত চেতনায়

এক রক্তিম আভা আকাশের বুকে
উত্তপ্ত মন জ্বলনের শঙ্কা
নিরুদ্বিগ্নতা থেকে কোনো এক গ্লানিময়
ক্লান্তির অবসাদে।
আর আমি ভেসে চলি তাই
কোনো এক বিক্ষিপ্ত চেতনায়।
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/১২/১৩

জানি কথা শেষ হবে

জানি কথা শেষ হবে না কিছু তো রয়ে যাবে
মনের জানালা আজীবন খোলা রবে
তোমার আনাগোনা সেথায়
কভু না শেষ হবে


-সুজন

জীবনের অনেক অধ্যায়

জীবনের অনেক অধ্যায় ভোলা যায়না বলেই বার বার বিক্রি হতে হয় নিজের মনের কাছে।
-অপরিচিত মানবী
০৪/১২/১৩

Friday, April 12, 2013

আকাশের মন খারাপ

রাতভর গরম ছিল| সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি আকাশের মন খারাপ| শুয়ে শুয়ে কিছু পছন্দের গান শুনছিলাম| "এমন সময় টেক্সট এলো নীচে নাম-শুভ|" আমি অতি দ্রুত রেডি হয়ে নীচে নেমে দাড়িয়ে আছি লাইব্রেরিতে বসে স্টাডি করব| ছাতা নেই সাথে আকাশের কান্না দেখি গেইটের সামনে দাড়িয়ে| ভাবছি আকাশ তার সব দুঃক্ষ ঝেড়ে হাউমাউ করে এত কাঁদে তবুও তার দুঃক্ষ কমে না কেন?

ভাবতে ভাবতে যেই ঘরের মধ্যে যাবো ফোন বেজে উঠলো| "তন্বী আজকে যাবনা বৃষ্টি হয় ছাতা নাই| রাতে বাসায় আসব| একসাথে পড়ব|" ব্যাস বলেই হ্যাং আপ| আমি ভাবছি শুভকে কল করে জিগ্যেস করি তাহলে টেক্সট কে করলো নীচে যাবার জন্য? আর জিগ্যেস করা হয় না| রাতেই করব মনে থাকলে| আই হেইট ইউ ওয়েদার|

-অপরিচিত মানবী
০৪/১২/১৩

নামহীন খেলাঘর

জীবন হচ্ছে এক অচেনা পথের অসীম ঠিকানা। যখন যেখানে সে যেমন। কোথাও স্বপ্ন ভাঙ্গে আবার কোথাও নতূন স্বপ্ন রচিত হয়। কোথাও মন দেয়া নেয়ার নতুন লগ্ন কোথাও মন ভাঙ্গার সানাই বাজে। আসলে জীবন হচ্ছে এক সংগ্রাম। অপ্রকাশিত কিছু ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। নীরব কিছু অচেনা আবেগের কল্পকথা। হাজার হাজার রঙের ফানুসের এক বিবর্ণ স্বপ্ন হচ্ছে জীবন। এক সময় আমার এ জীবনে ছিলো আকাশছোয়া কিছু অধরা স্বপ্ন। নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আমি মাইলের পর মাইল একা হেঁটে চলতাম। ছুটে চলতাম নীলচে আঁধার ঘেরা রাত্রিতে। রচনা করতাম অস্পষ্ট কোনো এক ভোরের কাব্য। যেখানে থেমে থাকার কোনো অবকাশ ছিলোনা।

জীবনের কোনো একটা সময় মনে হলো এ পথ আর পথিক এক বাঁকে আর মিলিত হবে না কোনদিন। পিছু না হেটে এগিয়ে চলি সামনে। পথিক থেমে যায়। আমি একেবেঁকে এগিয়ে চলি অন্তবিহীন। কতবার নিজেকে ঢেউহীন এক শূন্য সাগর মনে হয়েছে। নীরব আমি তবুও থামতে পারিনি। কোলাহলমুখর এ পৃথিবীতে আমি জীবনের সংজ্ঞা খুঁজে পাব একদিন এই ভেবে আমি ছুটে চলি। আসলে, মেঘের জলে ভেজা স্বচ্ছ কিছু স্মৃতির অনিশ্চয়তার বুকে জীবন হচ্ছে এক নামহীন খেলাঘর।
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/১২/১৩

ফেলে আসা দিনগুলো

আমার কাজের জায়গায় ১৩ তলায় অসম্ভব সুন্দর একটা রেম্প আছে। একটা রুমের দরজা পেরিয়ে সেই রেম্পে যেতে হয়। রুমটির উত্তর দক্ষিন কর্নারে একটা জানালা।জানালার পাশে দাড়ালে নিজেকে হারিয়ে ফেলি হারানো দিনে। যে দিনগুলো মনে পড়লে নিজেকে ভীষণ অদ্ভূত লাগে। আমার ফেলে আসা দিনগুলো এক সময়ের সবচে ভালো থাকার দিন ছিল। আমি কখনই পরিবর্তন সহ্য করতে পারিনা। নতুন মানুষ, নতুন পরিবেশ, নতুন অনুভূতি, নতুন সবকিছু আমাকে ভীত করে। মাঝে মাঝে ভাবি এসব কি শুধুই তাহলে সব কিছুর সীমাবদ্ধতা? জানালার পাশে পথ চেয়ে পাশে বেয়ে ওঠা সবুজপাতার গাছগুলোর কথা মনে পড়ে। খুব অদ্ভূত তো! যে গাছটার পাতা থেকে ঝরে পড়া বৃষ্টির ফোঁটা দেখে পার করেছি অনেকগুলো বছরের সকাল আমার। কখনো সে গাছটার নাম জানা হয়নি আমার, হয়ত ইচ্ছেই হয়নি- কী অদ্ভূত ব্যাপার না?
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/১১/১৩

জীবনের প্রকাশভঙ্গি

সংক্ষিপ্ত ভাবে আমাদের জীবনের প্রকাশভঙ্গিকে আমরা যত বেশি ব্যবহার করতে থাকি, জীবনের আবেগগুলোও ঠিক ততটাই বেশি সংক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/১০/১৩


নতুন আশায় বুক বাঁধি

ছোটোবেলা থেকেই আমি খুব কম স্বপ্ন দেখি। হয়ত কখনও পূরণ হবে না ভেবে। চলার পথে বার বার হোচট খেয়েছি। বালির বাধের মত ভেঙ্গে গেছে অনেক কিছু। যতটুকুই স্বপ্ন দেখতাম স্বপ্ন গুলো পরিনত হয়েছে দুঃস্বপ্নতে। তবুও ভেঙ্গে পরিনি আমি কখনো। নতুন আশায় বুক বেঁধেছি প্রতিবার। স্বপ্ন ভাঙতে ভাঙতে আজ আমি যখন বড় বেশি ক্লান্ত ঠিক তখন আবার আশার আলো দেখতে পাই নিজেকে আর ছোট বোনকে দিয়ে। আর তাইত স্বপ্ন ভাঙ্গা নিঃসঙ্গ পথিককে আমি আর আগের মত ভয় পাইনা। আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখি। আবার নতুন আশায় বুক বাঁধি।
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/১০/১৩

নতুন একটা দিনের শুরু

সুপ্রভাত| নতুন একটা দিনের শুরু| রাতে দেরী করে ঘুমিয়েছিলাম বলে দাদা চিল্লাচ্ছিল| তখন খুব রাগ হচ্ছিল| এখন দেখি সেই দাদা মাথায় হাত বুলিয়ে বলছেন, "ভালো করে পরীক্ষা দিস| দিনে তর উঠতে কষ্ট হবে তাই বকেছিলাম|" দাদা আমার জন্য কফি আনতে গেছেন| আমি তাকিয়ে আছি| রাত থেকে এ পর্যন্ত আমার একটুও খারাপ লাগেনি| কিন্তু এখন দাদাকে দেখে মনে হলো বাবা বের হয়ে গেলেন কফি আনতে| আচ্ছা বড় ভাইরা কি বাবার প্রতিচ্ছবি পান? আমি জানি আমি পরীক্ষা দিয়ে বের না হওয়া পর্যন্ত সে বসে থাকবে| আজকে দাদাকে বের হয়ে বলেই ফেলবো "তুই পাশে থাকলে আমি যেন বাবাকেই পাশে দেখি|"
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/১০/১৩

জীবনটা অনেক ছোট

জীবনটা অনেক ছোট। কিন্তু পাওয়ার আশা আমাদের অনেক বেশী। ছোট্ট এ জীবনে শুধু খারাপ কিছু না খুঁজে ভালো কিছুর সন্ধান করাটাই কি সমুচিত নয়? পাইলেও পাইতে পারি মানিক রতন।
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/০৯/১৩


অস্পৃশ্য প্রেম আমার

অস্পৃশ্য প্রেম আমার
না ছুঁতে পারি; না ছুঁয়ে দিতে পারি
শুধু পারি চেয়ে চেয়ে অক্ষরগুলোর খেলা দেখতে
মুঠোফোনে কিছু গভীর দীর্ঘশ্বাসের
নীল শব্দ ওপার থেকে ভেসে আসে।

আমি টের পাই তার দু'আঙ্গুলের ফাঁকে পুড়তে থাকে
জ্বলন্ত চুরুটের এক ক্ষুদ্র উতপ্ত অংশ
অচেনা কোনো এক পৃথিবীর রাস্তায়
অলিতে গলিতে সে তা ফুঁকে খুব ক্লান্ত হয়ে।

তার পৃথিবীর সকালের রং সোনালী হলুদ
শেষ ক্লান্তির রেশ কাটিয়ে উঠে দেখে
কছুপাতা জলের কতগুলো নড়বড়ে ফোঁটা
সে যেন জল নয় কোনো জীবনের গোটা
হঠাৎ করে যদি গড়িয়ে পড়ে সে জল
এক পলকেই হবে সব নশ্বর জীবনখানি।

আমি এক অসম্ভবের পিছে ঘুরি হন্যে হয়ে
পুরাতন থেকে বেরিয়ে নতুনের দিকে
সব কিছুর কবর দিয়ে যখন পা বাড়াবো
আয়নায় তার প্রতিবিম্ব আবার
অস্থিরতা বাড়িয়ে দেয় এই হৃদয়ে।।

-অপরিচিত মানবী
০৪/০৯/১৩

শুধু একবার

শুধু একবার আমাকে এক ঝলক আলো দাও
এক নদী জোছনা দাও
স্বপ্ন দাও এক মুঠো
আর সোনামুখী সুঁইয়ের প্রান্তে
গেঁথে দাও রূপোলী সুতো
আমি তোমার সঙ্গে যাবো
পাড়ি দিব অথৈ নদী
হবো না কখনো ভীত
সোনামুখী সুঁইয়ের প্রান্তে
গাঁথো যদি ভালোবাসার সুতো|
 

-অপরিচিত মানবী
০৮/১২/১২

অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি

বিদায়ের ঘন্টা বেজেছে এবার যে বিদায়ের পালা মা। আবার যদি ফিরে আসো মা তোমার ফেলে যাওয়া এই সংসারে- হঠাত কোন একদিন এসে দেখো আমি উঠোনের তুলসী গাছের পাশে লম্বা বাঁশটায় হেলান দিয়ে, তোমার প্রিয় এক বেনী ঝুলিয়ে, আড়মোড়া ভেঙ্গে দুহাত উঁচিয়ে আশায় ভর করে কোনো এক শেষ বিকেলে তোমার বাড়ি ফেরবার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি।
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/০৮/১৩

তোমার আমার

তোমার আমার একই ঘরতে ছিল বসবাস। সেই ঘরে না ছিল সংসার না ছিল দুয়ার। ছিল দু'খানা জানালা। আমারটা ছিল আজীবন বন্ধ তোমার এখনো খোলা।
 

-অপরিচিত মানবী
০৪/০৪/১৩


Monday, April 8, 2013

আমিও বৃষ্টিতে ভিজি

আমিও বৃষ্টিতে ভিজি একটু ভিজব সব খেলা সাঙ্গ হলে
যেমন মেঘেরা ভিজেছিল আকাশটা কেদেছিল বলে
 

-অপরিচিত মানবী 

আসবে তুমি কখন

আজ ঘুমিয়ে তারাগুলো চুপিচুপি কথা কয়
শুনছি কেবল আমি দখিনা জানালার আড়াল থেকে
আসবে তুমি কখন আমার হয়ে আবার ফিরে???


-অপরিচিত মানবী

তোমার চোখে

সবার চোখের আড়ালে, কেউ ফিসফিসিয়ে বলে-" কোন কাননের ফুল তুমি কোন গগনের তারার মতো; তোমার চোখে চাঁদ উঠে মুচকি হেসে।
 

-অপরিচিত মানবী

আবার তুমি

কাউকে আবার কোনদিন ভালোবেসে ভালবাসার অযাচিত অধ্যায় রচনা করতে পারবে কি কেউ ? দূর হতে বহু দুরে সাত সমুদ্র পেড়িয়ে? তাহলে এস দেখি তোমার সাহস কতো? দেখি আবার তুমি অদ্ভুত এক রোমাঞ্চ জাগাও কিনা সুকান্তের মত দুর্ভিক্ষের স্রোতে।
 

-অপরিচিত মানবী

আমি হয়ত আবার লিখব

আমি হয়ত আবার লিখব আমার
ছন্দ ছোয়া শেষ প্রচ্ছদের লেখা
তুমি লিখে দিও ক্ষুদ্র আমার পুস্তকটির নাম
নিরাশা অথবা যা ছিলো আমার স্বপ্নে দেখা।
 

-অপরিচিত মানবী

নিজের মনকে

আমাদের নিজের মনকে সময় দিতে হবে। আর তখনি আবেগ প্রবণ হয়ে নিজেকে বিষণ্ণতার অন্ধকারে ঠেলে দেবার ব্যাপারটা মিলিয়ে যাবে জীবন হতে। নিজেকে মনে হবে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ও প্রাণবন্ত।
 

-অপরিচিত মানবী

বরষা অতীত

আমার দিন পুড়ে যায় রোদ্র ভবিষ্যতে
বেহায়া বরষা অতীত স্মরণে ঠিক তখনি নেমে আসে।
 

-অপরিচিত মানবী 

Thursday, April 4, 2013

সময়ের বিন্দুতে

সময়ের বিন্দুতে নতুন নতুন অভিজ্ঞতার মাঝে ধুঁকে ধুঁকে বড় হওয়াই মাঝে মাঝে এক অস্থির আত্মতৃপ্তি এনে দেয়।
-অপরিচিত মানবী
০৪/০৩/১৩

Wednesday, April 3, 2013

তারপর মন ভাঙা সব

একদিন সব নিরূর্থক মনে হবে, তারপর সব মন ভাঙা কাহিনী ম্লান হয়ে অমাবস্যার রাতের অন্ধকারে মিশে যাবে| একদিন মনে পড়বে আমি আর তুমি বেডরুমের অর্কিডের টবে কতটা জীবন্ত ছিলাম|

-অপরিচিত মানবী  

 

প্রতারক সকাল

নীল নীল রোদ মাখা সকাল| বারান্দার এক কোনে দুটো চড়ুইয়ের কিচির মিচির করে প্রেমালাপের আপ্রাণ ব্যর্থ চেষ্টা| একটি চড়ুই উড়ে মিশে যায় কিছু উড়ন্ত সাথীদের সাথে আরেকটা চড়ুই অপেক্ষায় থাকে আবার কখন নীড়ে ফিরে আসবে তার প্রেমিক চড়ুইটি| আর আমি অবাক দৃষ্টিতে চড়ুইদের ছায়া দেখায় হঠাত মনযোগী হই| প্রতারক সকাল| 
-অপরিচিত মানবী

Tuesday, April 2, 2013

বেহায়া ছায়া

আমার চলার পথের প্রতিটা পায়ের ছাপের ছায়াসঙ্গী তুমি তুমি তুমি| ইস্স্স কি বেহায়া ছায়া!! খালি আমার পিছে পিছে আসে| ডাকলেও আসে না ডাকলেও সে আসে|
-অপরিচিত মানবী
০৪/০৩/১৩

তবুও স্বপ্ন দেখি

প্রতিদিন বার বার স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়
তবুও স্বপ্ন দেখি
তবুও জন্ম নেয় নতুন আশার।
 

-অপরিচিত মানবী


অদৃশ্য মানব

তার নাম অদৃশ্য মানব
সে চুপ করে সুখ খুঁজে নিজের মধ্যেই,
কখনো দেখতে চায়না কি করে সকাল ভোর হয় ;
দেখতে চায়না কি করে পাশ ফেরে পথ
আর পথ কি করে ঘুমের মাঝে সূর্য ছায়া ধরে রাখে||

সে স্পর্শ করে সমস্ত পূর্বাভাস
সমস্ত ঘাসের ভেতর ঘাস হয়ে সে বেঁচে থাকতে চায়
আমি ঢুকে পড়ি তার হৃতপিন্ডের ভেতর
আবার তার শ্বাস-প্রশ্বাস হয়ে বের হয়ে আসি
আমাকে ছুঁতে পারেনা তার কোনো অছুত||

আমি তার ভেতরে তার সত্বা হয়ে ছড়িয়ে থাকি
তার শরীরে যে আয়না আছে
তাতে চোখ রাখলেই সে আমায় দেখে
আর আমি তার দ্বিতীয় আমি
আমি কি আমি তা নিয়ে ভাবতেই দেখি
আমি তার শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রতঙ্গ
আমি তার গোপন ঈর্ষাকাতুর গভীর শরীরজোছনা
 

-অপরিচিত মানবী

সূর্যাস্তের ডুবে যাওয়া

রোদের ভেতরে ঘোরে একটা বিন্দু
বারান্দার এক চিলতে জায়গায় তার কিছুটা প্রাপ্তি দখল
আকাশের সাথে ভেসে আসে আরেক নতুন জীবন
সবকিছুর ওপর এক নীলরং ঘুর্নিপাক খায়
আর আমি এককোনে রেলিঙ্গের গা ঘেষে
বিখ্যাত সূর্যাস্তের ডুবে যাওয়া দেখি||
 

-অপরিচিত মানবী

দূর থেকে

দূর থেকে একটু উষ্ণতা দিয়েও মরা গাছে যৌবন ফিরিয়ে আনা যায়।
 

-অপরিচিত মানবী

সীমা থেকে অসীমে

দুনিয়াটা হচ্ছে গোল যেভাবেই সে ঘুরেনা কেন মিলবে একই বিন্দুতে এসে| মেঘে মেঘে জলকণা জমবে, বৃষ্টি নামবে| সব সময়ের খেলা| সময় যে অনন্ত মহাকাল তাও মুহূর্তে দিয়ে গাঁথা। জীবনের এক একটি কণা গেঁথে গেঁথে জন্ম নেয় সেকেন্ড,মিনিট, আর ঘন্টা। জন্ম নেয় দিন, মাস আর বছরের। ছোট এক খণ্ড থেকে অখন্ডের। সীমা থেকে অসীমের অন্তবিহীন এ যাত্রায় প্রতি ধূলিকণায় আমারই অস্তিত্ব, আমি নিজেই তার কণামাত্র।
-অপরিচিত মানবী