ঘুম
থেকে উঠেই আজ বহুদিন পর নিজ থেকে টেলিভিশনটা ছাড়লাম| এতদিন টেলিভিশন ছেড়ে
এই মৃত্যু আর কান্নাকাটি দেখার সাহস হয়নি| দাদা- বৌদিরা খবর দেখতে বসলে
আমাকে দেখার কথা বললেই আমি এড়িয়ে যেতাম; বিভিন্ন অজুহাতে ড্রইংরুম হতে বের
হয়ে যেতাম| ভাবতাম কি হবে এসব দেখে? আমি কি করতে পাড়বো এদের জন্যে?
গতকাল রাতে বড়বোন ভায়লা সেলিনা আপুর বাচ্চা প্রিয়ান বাসায় এসে আমাকে জিগ্গেস করলো, "তন্নিমা ডু ইউ নো হোয়াট হেপেনড ইন বাংলাদেশ? আমি বললাম ডু ইউ নো? আমাকে অবাক করে দিয়ে সে বললো-পিপল হু মেইড দেট বিল্ডিং দে ডিড নট মেইড দেট প্রপারলি| দে ডিড দেট অন পার্পজ সো দেট দে কেন গেট ইন্সুরেন্স মানি|" আমি অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়েছিলাম| আর ভাবছিলাম এই বাচ্চা ছেলে যে জীবনে বাংলাদেশের নিউজ খুলে দেখে না সেও জানে আমাদের দেশের জানওয়ার গার্মেন্টস মালিকগুলো কি করছে|
টেলিভিশনে খবর দেখছিলাম আর কাজে যাবার জন্য তৈরী হচ্ছিলাম| শুনছিলাম সাভারের উদ্ধারকর্মীরা কি করে বিল্ডিংটা কেটে কেটে কিছু জীবিত মানুষকে উদ্ধার করছেন আবার, হাঁপিয়ে উঠছেন অক্সিজেনের অভাবে| দেখলাম অসংখ্য ভাইবোনেরা বলছেন তাদের অনুভুতির কথা| তারা জানালেন সকালে কাজে গিয়েই তারা বলেছিলেন ছুটি দিয়ে দিতে| কিন্তু বাসভবনের মালিক্রা কানে তুলেননি| লোভী মালিকরা তাদের বাধ্য করেন কাজে যোগ দিতে। যে মেয়ে সকালে তার মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এসেছিল, যে মা তার সন্তানকে রেখে এসেছিলেন বাসায়; তারা কেউ কি জানতেন এই তাদের শেষ দেখা। বুধবার সকালে মুহূর্তের মধ্যে ধসে পড়ে রানা ভবনটি। মানুষের আর্তনাদ আর ‘বাঁচাও বাঁচাও’ আকুতিতে ভারি হয়ে ওঠে সাভারের বাতাস। অধরচন্দ্র হাই স্কুলে হাজার হাজার মা-বাবা, ভাই-বোন আরো অনেকে ছবি হাতে নিয়ে তাদের প্রিয়জনকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন আর আর্তবিলাপ করে যাচ্ছেন| প্রিয় মানুষের ফোনটি একবার বেজে উঠুক এই তাদের প্রার্থনা। কেউ ছোটেন হাসপাতালে, কেউবা লাশের খোঁজে। প্রিয়জনের লাশ পেলেও যেন কিছুটা সান্ত্বনা পাবেন তারা। আবারও কোন কোন লাশও কি স্বজনের জন্য অপেক্ষা করছে না? মানুষ বসে আছে মৃত্যুর অপেক্ষায়- এর চেয়ে মর্মান্তিক দৃশ্য আর কি হতে পারে? উদ্ধার কাজে এগিয়ে আসেন হাজার হাজার মানুষ। জীবনবাজি রেখে আমাদের বাবু ভাই উদ্ধার করেন বহু লোককে (স্যালুট ভাই আপনাকে)।
চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিল| বের হব হঠাত শুনি একজন মা চিত্কার করে বলছেন আমার দুই মা কোথায়?আমার জোড়ের কবুতররা কি আর ফিরবোনা? আমার দু'চোখ ভরে উঠলো পানিতে| বন্নী কেঁদে বললো আমি আর তুমিও হতে পারতাম| আমাদের মাও এভাবে কাদতে পারতেন|
হাজারো মানুষের আহাজারি আর আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে সাভারের পরিবেশ। চারপাশে কেবল কান্না আর কান্না। কেউ কাঁদছে বুক চাপড়ে, কেউবা আবার নিরবেই ঝরাচ্ছে চোখের জল। আর সে জল নিয়েই দিগ্বিদিক স্বজনের খোঁজে ছুটে বেড়াচ্ছে হাজারো চোখ। ছুটছেন হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে। আমি ঘর থেকে বের হয়ে কোনো মা-বাবার জন্য শোকপ্রকাশ করছিনা| শুধু ভাবছি আরো কতো এরকম মৃত সন্তানদের আমাদের দেখতে হবে? আর কতবার আমাদের রাষ্ট্রীয় রসিকতা সহ্য করে যেতে হবে?
-অপরিচিত মানবী
০৪/২৭/২০১৩
গতকাল রাতে বড়বোন ভায়লা সেলিনা আপুর বাচ্চা প্রিয়ান বাসায় এসে আমাকে জিগ্গেস করলো, "তন্নিমা ডু ইউ নো হোয়াট হেপেনড ইন বাংলাদেশ? আমি বললাম ডু ইউ নো? আমাকে অবাক করে দিয়ে সে বললো-পিপল হু মেইড দেট বিল্ডিং দে ডিড নট মেইড দেট প্রপারলি| দে ডিড দেট অন পার্পজ সো দেট দে কেন গেট ইন্সুরেন্স মানি|" আমি অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়েছিলাম| আর ভাবছিলাম এই বাচ্চা ছেলে যে জীবনে বাংলাদেশের নিউজ খুলে দেখে না সেও জানে আমাদের দেশের জানওয়ার গার্মেন্টস মালিকগুলো কি করছে|
টেলিভিশনে খবর দেখছিলাম আর কাজে যাবার জন্য তৈরী হচ্ছিলাম| শুনছিলাম সাভারের উদ্ধারকর্মীরা কি করে বিল্ডিংটা কেটে কেটে কিছু জীবিত মানুষকে উদ্ধার করছেন আবার, হাঁপিয়ে উঠছেন অক্সিজেনের অভাবে| দেখলাম অসংখ্য ভাইবোনেরা বলছেন তাদের অনুভুতির কথা| তারা জানালেন সকালে কাজে গিয়েই তারা বলেছিলেন ছুটি দিয়ে দিতে| কিন্তু বাসভবনের মালিক্রা কানে তুলেননি| লোভী মালিকরা তাদের বাধ্য করেন কাজে যোগ দিতে। যে মেয়ে সকালে তার মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এসেছিল, যে মা তার সন্তানকে রেখে এসেছিলেন বাসায়; তারা কেউ কি জানতেন এই তাদের শেষ দেখা। বুধবার সকালে মুহূর্তের মধ্যে ধসে পড়ে রানা ভবনটি। মানুষের আর্তনাদ আর ‘বাঁচাও বাঁচাও’ আকুতিতে ভারি হয়ে ওঠে সাভারের বাতাস। অধরচন্দ্র হাই স্কুলে হাজার হাজার মা-বাবা, ভাই-বোন আরো অনেকে ছবি হাতে নিয়ে তাদের প্রিয়জনকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন আর আর্তবিলাপ করে যাচ্ছেন| প্রিয় মানুষের ফোনটি একবার বেজে উঠুক এই তাদের প্রার্থনা। কেউ ছোটেন হাসপাতালে, কেউবা লাশের খোঁজে। প্রিয়জনের লাশ পেলেও যেন কিছুটা সান্ত্বনা পাবেন তারা। আবারও কোন কোন লাশও কি স্বজনের জন্য অপেক্ষা করছে না? মানুষ বসে আছে মৃত্যুর অপেক্ষায়- এর চেয়ে মর্মান্তিক দৃশ্য আর কি হতে পারে? উদ্ধার কাজে এগিয়ে আসেন হাজার হাজার মানুষ। জীবনবাজি রেখে আমাদের বাবু ভাই উদ্ধার করেন বহু লোককে (স্যালুট ভাই আপনাকে)।
চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিল| বের হব হঠাত শুনি একজন মা চিত্কার করে বলছেন আমার দুই মা কোথায়?আমার জোড়ের কবুতররা কি আর ফিরবোনা? আমার দু'চোখ ভরে উঠলো পানিতে| বন্নী কেঁদে বললো আমি আর তুমিও হতে পারতাম| আমাদের মাও এভাবে কাদতে পারতেন|
হাজারো মানুষের আহাজারি আর আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে সাভারের পরিবেশ। চারপাশে কেবল কান্না আর কান্না। কেউ কাঁদছে বুক চাপড়ে, কেউবা আবার নিরবেই ঝরাচ্ছে চোখের জল। আর সে জল নিয়েই দিগ্বিদিক স্বজনের খোঁজে ছুটে বেড়াচ্ছে হাজারো চোখ। ছুটছেন হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে। আমি ঘর থেকে বের হয়ে কোনো মা-বাবার জন্য শোকপ্রকাশ করছিনা| শুধু ভাবছি আরো কতো এরকম মৃত সন্তানদের আমাদের দেখতে হবে? আর কতবার আমাদের রাষ্ট্রীয় রসিকতা সহ্য করে যেতে হবে?
-অপরিচিত মানবী
০৪/২৭/২০১৩
No comments:
Post a Comment