Tuesday, May 28, 2013

বৃষ্টি, আমার ধ্রুবসখা

১৬ ঘন্টা কাজ করে এসে ৫ ঘন্টা ঘুমিয়ে উঠলাম। ভালই ঘুম হয়েছে। মাথাটা ভীষণ ধরে আছে। উঠেই কিছু হতাশাজনক এস এম এস পড়লাম। পড়ে হাসছিলাম আর ভাবছিলাম, গতকালই তো শেয়ার করলাম, না জেনে আমাকে যেন কেউ জায না করে। পড়েও অনেকে বুঝতে চায়না। আসলে সে অবুঝ।

চা বানালাম। গরম চা নিয়ে বারান্দায় এসে বসতেই দেখলাম একজন স্প্যানিশ বৃদ্ধা পাশের বাড়ির বারান্দা থেকে আমায় দেখে খুব খুশি হয়ে বললেন, 'শীত কি যাবেনা?' আমি হেসে বললাম, 'শীত তো বৃষ্টির জন্য আবার এলো। নাহয় বিদায় তো নিয়েই নিয়েছিলো।'

মিস হিল্ডা। নিঃসঙ্গ একজন মানুষ। নিজের এই এতোবড় বাড়িতে তিনি তার টাকো বেল কুকুরটা নিয়ে একা থাকেন। উইকেন্ডে তার দু'বন্ধু এসে চা খেয়ে ৩/৪ ঘন্টা তার সাথে সময় কাটান। মাঝে মাঝে আমাকে কল করে তার কিছু গল্প শেয়ার করেন। বেশির ভাগ গল্প তার যৌবনের। কীভাবে তিনি তার স্বামীর প্রেমে পড়েছিলেন।

এককালে ঘরভর্তি মানুষ ছিলো আর আজকে স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি
নিঃসঙ্গ।

উফ! কি ঠান্ডা বাতাস! আমি চা শেষ করে ভিতরে চলে আসবো। মিস হিল্ডা বললেন, 'মেয়ে শুনো, তোমার আমার মধ্যে ভীষণ মিল। আর অমিল হলো আমি অনেক ভালবাসা পেয়েছি আর তুমি বঞ্চিত হয়েছ ভালবাসা থেকে!' আমি কিছুক্ষণ স্থির চোখে তাকে দেখলাম। সেজবাবের আশায় দাঁড়িয়ে রইলো। আমি শুধু হেসে বললাম, ভেতরে যাবো ভালো থেকো।

সত্যিই তো বলল মিস হিল্ড। জানালায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখি আর ভাবি- বারান্দা থেকে ওভাবে কেন পালিয়ে এলাম? কার থেকে পালালাম? একজন বৃদ্ধার থেকে নাকি সত্যের কাছ থেকে? সত্যের হাত থেকে পালিয়ে এসেও পার পাব না, জানি, কেও পায় না। আসলে, সত্যটা এত ধারালো ছিল যে তার আকস্মিক আঘাতে মুহূর্ত থমকে গিয়েছিল। এক অপূর্ণতা যেন চোখের সামনে কেউ ঝুলিয়ে রেখে বলছে, 'এই দেখো, তোমার ভেতরের বিশাল দগদগে ক্ষতটা আমি দেখে ফেলেছি!'

বৃষ্টি, আমার ধ্রুবসখা, তোমার কান্নার সাথে সত্যিটাকে ধুইয়ে নিয়ে যাও। প্লিজ...

-অপরিচিত মানবী
০৫/২৬/১৩

No comments:

Post a Comment